রমজান মাসের আমল | মাহে রমজানের গুরুত্বপূর্ণ আমল ও রমজানের ফজিলত

হাসিবুর
By -

পবিত্র রমজান মাস হচ্ছে সিয়াম সাধনার মাস। রমজান মাস হচ্ছে অন্য যে কোন মাসের চেয়ে বেশি ইবাদত এর সওয়াব ও এই মাসে অনেক বেশি। প্রতি বছর একবার এই রমজান মাস ফিরে আসে। তাই ধর্মপ্রাণ মুসলিম ভাই এবং বোনদের জন্য আমরা আমাদের এই ওয়েবসাইট এর মাধ্যমে রমজান মাসে ভালো কিছু আমল ও ফজিলত নিয়ে আপনাদের সাথে কিছু কথা শেয়ার করবো। 

রমজান মাস প্রতিটি মুসলিম নর-নারীর জন্য অত্যন্ত পবিত্রও আমলের একটি মাস। এই রমজানের ফজিলত বিভিন্ন কারনে অপরিসীম। রমজান মাসের (romjan mas) ফজিলত এর একটি অন্যতম কারন হল এই রমজানে আমাদের পবিত্র গ্রন্থ কোরআন নাজিল হয়েছে আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সঃ এর উপর। তাই এই রমজান মাস আমাদের মুক্তির মাস। তাই রমজান মাসের আমল এর ফজিলত বেশি পাওয়া যায়।

রমজান মাসের আমল ও ফজিলত গুলো কি কি ও এছাড়াও কিভাবে রমজান মাসে আমল করলে খুব সহজে অনেক বেশি ফজিলত লাভ করতে পারবেন। তা নিয়েই আমাদের এই ওয়েবসাইটে আলোচনা করা হয়েছে। আর এই রমজান মাসের দোয়া ramzan dua আমল করার ফলে আপনি প্রতিদিন হাজার হাজার লক্ষ্য লক্ষ্য নেকি লাভ করতে পারবেন সেই সাথে আপনার জীবন এর গুনাহ কমতে থাকবে। প্রথম রোজা থেকে শুরু করে ৩০ রমজানের আমল হিসেবে প্রতিদিন এর রমজানের দোয়া আমাদের এই ওয়েবসাইটে পাবেন।

আরও পড়ুনঃ মোবাইল ব্যাংকিং সুরক্ষায় করণীয়

এছাড়াও আমরা এই আর্টিকেলে ২০ টি রমজান মাসের গুরুত্বপূর্ণ আমল (২০ amol of Ramadan) উল্লেখ করেছি। আমাদের এই ওয়েবসাইটে এই ২০টি আমল গুলো যা আপনি নিয়মিত আমল করলে রমজানের ফজিলত পরিপূর্ণ ভাবে পালন করতে পাবেন ইনশাআল্লাহ্‌। রমাজান মাসে এমন কিছু আমল যেগুলো হচ্ছেঃ 

আল্লাহর যিকর করা, অপরকে কুরআন শিক্ষা দেয়া, হিফয করা, সহীহভাবে কুরআন পড়া, ফিতরাহ দেওয়া, তওবা ও ইস্তেগফার করা, বেশি বেশি দোআ ও কান্নাকাটি করা, সাহরী খাওয়া, বেশি বেশি দান-সদাকাহ করা, সালাতুত তাহাজ্জুদ পড়া, বেশি বেশি কুরআন তিলাওয়াত করা, সহীহভাবে কুরআন শেখা, তাকওয়া অর্জন করা, সময় মত সালাত আদায় করা, তাওবাহ ও ইস্তেগফার করা ইত্যাদি।
রমাজান মাসের গুরুত্বপূর্ণ আমলগুলো হলো
১. সিয়াম পালন করা

ইসলামের পাঁচটি রুকনের মধ্যে একটি রুকন হলো সিয়াম বা রোযা। আর রমাজান মাসে সিয়াম পালন করা প্রত্যেক মুসলমান নর এবং নারীর ফরজ। সেজন্য রমজান মাসের প্রধান আমল হলো সুন্নাহ মোতাবেক বা সুন্নাহ অনুযায়ী সিয়াম পালন করা।

২. সময় মত সালাত আদায় করা 

রমজান মাসে সিয়াম পালনের সঙ্গে সঙ্গে সময় মত নামায বা সালাত আদায় করার মাধ্যমে জান্নাতে যাওয়ার পথ আরও সুগম হয়। আর আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি লাভ করা যায়। যার ফলে আমরা ইনশাআল্লাহ পরবর্তী জীবনে সুখ লাভ করতে পারবো। 

৩. সহীহভাবে কুরআন শেখা 

রমাজান মাসে পবিত্র কুরআন মাজিদ অবতীর্ণ করা হয়েছে। আর রমজান মাসের অন্যতম আমল বা ইবাদত হলো সহীহভাবে কুরআন মাজিদ শেখা। আর প্রত্যেক মুসলমান নর এবং নারীর উপর কুরআন শিক্ষা করা ফরয করা হয়েছে।

৪. অপরকে কুরআন পড়া শেখানো 

অন্য সকল মাসের চেয়ে রমজান মাসে অপরকে কুরআন মাজিদ শেখানোর উত্তম সময়। রমজান মাসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজে সাহাবীদেরকে কুরআন শিক্ষা দিতেন।

আরও পড়ুনঃ ঘুমানোর আগে যেই কাজ গুলো অবশ্যই করবেন নাহলে বিপদ

৫. সাহরী খাওয়া

রমজান মাসে সাহরী খাওয়া হচ্ছে গুরুপ্তপূর্ণ বিষয়। সাহরী খাওয়ার মধ্যে রয়েছে বরকত এবং সিয়াম পালনে সাহরী খাওয়া এটি অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

৬. সালাতুত তারাবীহ পড়া 

সালাতুত তারাবীহ পড়া এই রমজান মাসের অন্যতম একটি আমল। রমাজান মাসে তারাবীহ সালাত পড়ার সময় তার হক আদায় করতে হয়। তারাবীহ এর সালাত তার হক আদায় করে থাকে অর্থাৎ ধীর স্থীর ভাবে আদায় করতে হবে। তারাবীহ জামায়াতের সাথে আদায় করা ইসলামে সুন্নাহ এর অন্তর্ভুক্ত। 

৭. তাকওয়া অর্জন করা 

তাকওয়া হচ্ছে এমন একটি গুণ যা বান্দাহকে আল্লাহর ভয়ে যাবতীয় পাপ কাজ বা খারাপ ও অশ্লীল কাজ কর্ম থেকে বিরত রাখে এবং আল্লাহ তায়ালার আদেশ মানতে বাধ্য করে। আর রমাদান মাস বা রমজান মাসে এই বিশেষ মৌসুমে তাকওয়া নামক এই গুণটি অর্জন করার এক বিশেষ সময়।

৮. ইফতার করানো

রমজান মাসে একজন রোজাদার ব্যক্তিকে ইফতার করানো বিশাল বা বিরাট সাওয়াব বা নেকির কাজ। রমজান মাসে প্রতিদিন কম পক্ষে একজন কে হলেও ইফতার করানোর দরকার বা একজন রোজাদার ব্যক্তি কে ইফতার করানোর চেষ্টা করা।

৯. তাওবাহ ও ইস্তেগফার করা

তাওবাহ শব্দের আভিধানিক অর্থ সকল ধরনের পাপাকার কাজ কর্ম থেকে ফিরে আসা, গুনাহের কাজ আর না করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা। রমজান মাস তাওবাহ করার উত্তম সময়। আর তাওবাহ করলে আল্লাহ খুশী হন। তওবা কারীকে আল্লাহ তায়ালা অনেক বেশি পছন্দ করেন। 

১০. বেশি বেশি দোআ ও কান্নাকাটি করা 

ইসলামে দোয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদাত। এই রমজান মাসে আল্লাহ তায়ালার কাছে কোন কিছু চাইলে তা তিনি কখনও ফিরে দেন না। এজন্য রমজান মাসে বেশি বেশি দোয়া করা ও আল্লাহর নিকট বেশি বেশি কান্নাকাটি করা। 

আরও পড়ুনঃ কেন আপনি দাঁড়ি রাখবেন | দাঁড়ি রাখার উপকারিতা

১১. লাইলাতুল কদর তালাশ করা

রমাজান মাসে এমন একটি রাত আছে যে রাতটি হাজার মাসের চেয়েও বেশি উত্তম।

১২. সামর্থ্য থাকলে উমরা পালন করা

রমজান মাসে Ramadan mas এ একটি উমরা করলে একটি হাজ্জ করার জন্য যে পরিমান সওয়াব হয় ঠিক এই মাসে উমরা করলে সমান সাওয়াব হয়।

১৩. ইতিকাফ করা 

ইতিকাফ আরবি শব্দ আর এর অর্থ হচ্ছে অবস্থান করা। অর্থাৎ মানুষের থেকে আলাদা হয়ে সালাত, সিয়াম, কুরআন মাজিদ তিলাওয়াত, দোয়া, গুনাহ মাফের জন্য ও অন্যান্য ইবাদাতের মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালার সান্নিধ্যে একাকী কিছু সময় যাপন করা। ইতিফাক ইবাদাতের এত মর্যাদা বা এত সম্মান যে প্রত্যেক রমজানে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমজানের শেষ দশ দিন নিজে এবং তাঁর সাহাবীগণ ইতিকাফ করতেন।

১৪. বেশি বেশি দান-সদাকাহ কর 

রমজান মাসে বেশি বেশি দান সাদাকাহ করার জন্য প্রত্যেক ব্যক্তি কে চেষ্টা করতে হবে। বিধবা ও গরীব দুঃখী, ইয়াতিম, মিসকীন এছাড়া অসুস্থ ব্যক্তিদের প্রতি সহানুভূতিশীল হতে হবে। এছাড়াও বেশি বেশি দান খয়রাত করা। সবচেয়ে ভালো হচ্ছে হিসাব করে রমজান মাসে যাকাত দেয়া উত্তম। কেননা আমাদের প্রিয় রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমজান মাসে বেশি বেশি দান খয়রাত করতেন। 

১৫. দাওয়াতে দ্বীনের কাজ করা

রমজান মাস হচ্ছে দ্বীনের দাওয়াত বা ইসলামের দাওয়াত দেয়ার জন্য সর্বোত্তম মাস। প্রত্যেক মানুষকে ইসলাম এর দাওয়াত দেয়া বা আল্লাহর রাস্তায় দিকে ডাকাও উত্তম কাজ। এজন্য এই রমজান মাসে মানুষকে দ্বীনের পথে বা ইসলামের পথে নিয়ে আসার জন্য আলোচনা করা, কুরআন ও হাদীসের দারস প্রদান, বই বিতরণ, কুরআন বিতরণ ইত্যাদি কাজ বেশি বেশি করা আমাদের প্রত্যেক মুসলিম ভাই বোন কে করা উচিত।

১৬. উত্তম চরিত্র গঠনের অনুশীলন করা 

রমজান মাস নিজকে সুন্দর চরিত্রবান ভাবে গঠনের মাস। রমজান মাস নিজেকে এমন প্রশিক্ষণ নিতে হবে। যার মাধ্যমে বাকি মাস গুলো এভাবেই পরিচালিত হয়। কাজেই এ সময় বা রমজান মাসে আমাদেরকে সুন্দর চরিত্র গঠনের অনুশীলন করতে হবে।

১৭. কল্যাণকর কাজ বেশি বেশি করা 

রমজান মাসে একটি ভালো কাজ করা অন্য সকল মাস বা অন্য দিন এর চেয়ে অনেক বেশি উত্তম। আর সেজন্য যথা সম্ভব আপনাকে এই রমজান মাসে বেশি বেশি ভাল কাজ করতে হবে।

আরও পড়ুনঃ AC কিভাবে কাজ করে? AC কেনার সময় কি কি জানা দরকার

১৮. শুকরিয়া আদায় করা

রমাজান মাস পাওয়া ব্যক্তির জন্য একটা বিরাট সৌভাগ্যের ব্যাপার। আর সেজন্য আমাদের উচিত আল্লাহ তায়ালার বেশি বেশি শুকরিয়া আদায় করা। এবং আগামী রমজান পাওয়ার জন্য আল্লাহ তায়ালার কাছে তাওফীক কামনা করা।

১৯. বেশি বেশি কুরআন তিলাওয়াত করা 

রমজান মাস হচ্ছে কুরআনের মাস। আর এই রমজান মাসে অন্যতম প্রধান কাজ হলো অনেক বেশি বেশি কুরআন মাজিদ তিলাওয়াত করা।

২০. সালাতুত তাহাজ্জুদ পড়া

রমজান মাস ছাড়াও অন্য সকল মাসে সালাতুত তাহাজ্জুদ পড়ার মধ্যে রয়েছে অনেক বেশি বিরাট সাওয়াব এবং মর্যাদা রয়েছে। রমাজানের কারণে আরো অনেক বেশি ফজিলত রয়েছে এই তাহাজ্জুদ সালাত আদায় করার মধ্যে। যেহেতু রোযা রাখার জন্য সাহরী খেতে উঠতে হয়। সেজন্য রমাজান মাসে সালাতুত তাহাজ্জুদ আদায় করার বিশেষ সুযোগ রয়েছে।

২১. ইফতার করা 

সময় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ইফতার করা অনেক বিরাট একটি ফজিলাত পূর্ণ আমল। কোন বিলম্ব না করে ইফতার করা উচিত সময় মতো।

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Learn more
Ok, Go it!