কি কারণে কিডনিতে পাথর হয়

হাসিবুর
By -

কি কারণে কিডনি সমস্যা হয় — বয়স্ক মানুষের মতো শিশুদের হতে পারে কিডনি রোগ। বর্তমানে দেশে ৪০-৫০ লাখ শিশু আছে যারা বিভিন্ন রকমের কিডনি রোগে ভুগছে। বয়স্কদের মতো করে শিশুদেরও কিডনি রোগেরও লক্ষণ প্রায় সেম। করোনা ভাইরাস মহামারির সময়ে শিশুদের কিডনি রোগের ঝুঁকি আছে অনেক বেশি। শিশু বাচ্চাদের কিডনি রোগের লক্ষণসমূহ এবং নানান দিক নিয়েই আমরা বিস্তারিত আলোচনা করবো আজকের এই আর্টিকেলে। 

শিশুদের কিডনি রোগে আক্রান্ত হওয়ার প্রধান কারণ?

এই বিষয়ে অধ্যাপক ডা. গোলাম মঈন উদ্দিন জানিয়েছেন, সাধারণত জন্মগত অথবা বংশগত কারণে হতে পারে শিশুদের কিডনি রোগ। বংশগত কারণেই কিডনি রোগগুলো শিশু মাতৃগর্ভে থাকা অবস্থাতেই ধরা পড়ে। তারপরে শিশু জন্মের পরে বেশকিছু লক্ষণ দেখা দেয়। যেমন- শ্বাসকষ্ট, প্রস্রাব বন্ধ হয়ে যাওয়া, হাত পা বেকে যাওয়া, শিশুর দেহের বৃদ্ধি না হওয়া, বমি হওয়া, প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত যাওয়া, ইলেকট্রোলাইটিক ইমব্যালেন্স হওয়া, ফোটা ফোটা প্রস্রাব করা ইত্যাদি।

শিশুদের কিডনি বিকল হয় কেন?

শিশু বাচ্চাদের কিডনি বিকল দুই ধরনের। একটি আকস্মিক অর্থাৎ দ্রুত গতিতে কিডনি বিকল হয়ে যাওয়া। যেটাকে বলা হয়ে থাকে মূলত একিউট কিডনি ইনজুরি। অন্যটি হচ্ছে ধীরগতিতে কিডনি বিকল।

আকস্মিক অথবা দ্রুত গতিতে কিডনি বিকল হয়ে যাওয়ার কারণ হচ্ছে ডায়রিয়া অথবা বমির কারণে শিশুর যখন ডিহাইড্রেশনে ভোগে, তখনি কিডনিতে রক্তপ্রবাহ কম হয়ে থাকে। ডিহাইড্রেশনের ফলে শিশুকে যদি ওরস্যালাইন খাওয়ানো না হয় তবে তার কিডনি খুব দ্রুতগতিতে বিকল হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। যার কারণে প্রস্রাব কমতে থাকে।

ডায়রিয়া অথবা বমির কারণে শরীরের মধ্যে যে ফ্লুইড কমতি হয়, তার কারণে শরীরে কিডনি বিকল হতে থাকে আকস্মিকভাবে। যেকোন ইনফেকশনের ফলে কিডনি বিকল হয়ে যায়। প্রদাহের কারণে কিডনি বিকল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এটাও হচ্ছে আকস্মিক কিডনি বিকল। তাছাড়াও বর্ষাকালে মৌমাছি বা সাপের কামড়ের কারণে এই বিষ শরীরে মধ্যে গিয়ে কিডনি বিকল করে দিতে পারে। কিছু কিছু ওষুধের গ্রহণ করার কারণে কিডনি বিকল হতে পারে। প্রস্রাবের রাস্তায় জন্মগতভাবে ত্রুটি থাকলে কিডনি বিকল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

আরও পড়ুনঃ মেছতা কেন হয়, মেছতা দূর করার উপায়

কী কারণে কিডনিতে পাথর হয়?

জন্মগতভাবে শরীরে এই ধরনের রোগ হয়ে থাকে। বিশেষ করে আত্মীয়দের মাঝে বিয়ে হলে এই ধরনের রোগ হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে। মূত্রনালীতে ব্লক, স্টেসিস থাকলে কিডনিতে পাথর হবার সম্ভাবনা থাকে।

শিশুরা কিডনি রোগে আক্রান্ত কি-না বুঝবেন কীভাবে?

এক্ষেত্রে লক্ষণীয় উপসর্গগুলো হচ্ছে শিশু ঘুম থেকে ওঠার পর চোখ ও মুখ ফুলে যাওয়া, প্রস্রাবের চাপ হ্রাস পাওয়া, হাতে-পায়ে পানি ধরা, প্রস্রাব কমে যাওয়া, পেটে পানি চলে আসা। প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত যাওয়া, প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া, জ্বর ও বমি বমি ভাব।

ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা বৃদ্ধি পেলে মাথাব্যথা, খিচুনি এসকল উপসর্গ দেখা দেয়। তাছাড়াও শিশুদের শরীরে দুর্বলতা, রক্তশূন্যতা, ক্ষুধামন্দা, ওজন কম হওয়া ইত্যাদি এই সকল উপসর্গও দেখা দিতে পারে। এই সব লক্ষণ দেখা দিলে তবে অভিভাবকরা শিশুদেরকে নিয়ে চিকিৎসকের শরণ্যাপন্ন হবেন।

বাংলাদেশে শিশু কিডনি রোগীর সংখ্যা কত?

বর্তমানে দেশে ৪০-৫০ লক্ষ শিশু বিভিন্ন রকমের কিডনির রোগে ভুগছে। শিশুরা জন্মগত অথবা বংশগতভাবে কিডনি রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে। জন্মগতভাবে কিডনি রোগগুলো অনেকটাই আল্ট্রাসনোগ্রাফির মাধ্যমে ধরা পড়ে। জন্মের পরে কিডনি রোগ নেফ্রোটিক সিনড্রোম, প্রস্রাবে ইনফেকশন, ড্রাগের কারণে কিছু ইনফেকশন হয়। এছাড়াও ডিহাইড্রেশন, কিডনি ছোটো হওয়া, ডান বা বাম যেকোনো এক অংশে দুটো কিডনি চলে যাওয়াসহ কিডনির সকল ধরণের রোগ নিয়েই শিশুরা শিশু কিডনি রোগ বিশেষজ্ঞদের কাছে যায়।

আরও পড়ুনঃ অ্যাসিডিটি ও গ্যাস সমস্যার জন্য ঘরোয়া সমাধান

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Learn more
Ok, Go it!