বাংলাদেশের মধ্যে হাজারো শিক্ষিত যুবক আছে যারা এখনো পর্যন্ত বেকার। তাই অনেকেই অর্থ উপার্জনের তাগিদে বেছে নেয় প্রবাস জীবন। তবে সবার কাছে ইউরোপের দেশগুলোতে যাওয়ার মত অর্থ না থাকলেও অধিকাংশ মানুষই সৌদি আরব, ওমান, কাতার, দুবাই, আরব আমিরাতের মতো দক্ষিণ কোরিয়াতেও যেতে যায়।
আর এজন্যই অনেকের মনে প্রশ্ন জাগে দক্ষিণ কোরিয়া কোন কাজের চাহিদা বেশি ? যারা দক্ষিণ কোরিয়া কাজের ভিসা সম্পর্কে জানতে চান তাদের জন্য আজকে আর্টিকেলটি খুব উপকারী হবে।
কারণ আজকের আর্টিকেলে আমি বলব দক্ষিণ কোরিয়া কোন কাজের চাহিদা বেশি, লটারি ছাড়া কিভাবে দক্ষিণ কোরিয়াতে যাবেন কিংবা ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে সরকারি ভাবে কিভাবে দক্ষিণ কোরিয়াতে যাবেন। তাহলে চলুন শুরু করা যাক।
(toc) #title=(পোষ্ট সুচিপত্র)
দক্ষিণ কোরিয়ায় কোন কাজটি সবচেয়ে বেশি সম্মানিত
দক্ষিণ কোরিয়া কোন কাজের চাহিদা বেশি এই বিষয় সম্পর্কে জানার আগে আমরা একটু জেনে নেব দক্ষিণ কোরিয়ায় কোন কাজটি সবচেয়ে বেশি সম্মানিত? অর্থাৎ দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে কোন পেশাটি বাকি সব পেশার থেকে অধিক সম্মানিত। এর উত্তর হলো আইনজীবী পেশা।
অর্থাৎ দক্ষিণ কোরিয়ায় উকিলদেরকে যথেষ্ট পরিমাণ সম্মান দেওয়া হয় এবং সে দেশে যারা আইনজীবী পেশা নিয়ে পড়াশোনা করে কিংবা যারা আইনজীবী তাদেরকে আলাদা ভাবেই সম্মান করা হয়।
সুতরাং কেউ চাইলেই বাংলাদেশ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করার পর দক্ষিণ কোরিয়ার কোন ল কলেজে ভর্তি হতে পারে। এবং স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে দক্ষিণ কোরিয়ায় যেতে পারে এবং সেখানে আইন পেশা নিয়ে পড়াশোনা করে একজন আইনজীবী হয়ে সম্মানিত হতে পারে।
Check out all of our বাংলাদেশের বীমা কোম্পানির নাম.
দক্ষিণ কোরিয়ায় কি চাকরির অভাব আছে
দক্ষিণ কোরিয়ায় কি চাকরির অভাব আছে? কিংবা দক্ষিণ কোরিয়া কোন কাজের চাহিদা বেশি, যারা দক্ষিণ কোরিয়ায় যেতে চায়, তাদের মনে এই প্রশ্নগুলো থাকে। যারাই চিন্তা করে যে দক্ষিণ কোরিয়ায় গিয়ে নিজেদের লাইফ সেটেল করবে।
অথবা ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে দক্ষিণ কোরিয়ায় যাবে, তাদের মাথায় প্রথমেই একটি প্রশ্ন ঘুরপাক খায় আর তা হলো দক্ষিণ কোরিয়ায় কি চাকরি অভাব আছে? এর উত্তর হলো "না"।
অর্থাৎ দক্ষিণ কোরিয়ায় চাকরির অভাব নেই। প্রতিবছরই দক্ষিণ কোরিয়ায় কৃষি খাতে ব্যাপক পরিমাণ শ্রমের ঘাটতি দেখা দেয়। যার ফলে বিভিন্ন দেশ থেকে দক্ষিণ কোরিয়ায় ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে অনেক মানুষ প্রবেশ করে।
দক্ষিণ কোরিয়ার জীবন যাপন খুবই স্বচ্ছল ও সুন্দর। সেখানে আইটি সেক্টর, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, রেস্টুরেন্ট ইত্যাদি বিভিন্ন খাতেই চাকরির সুযোগ রয়েছে। তাই চাইলে দক্ষিণ কোরিয়াতে গিয়ে কাজ করা সম্ভব।
Check out all of our দুবাই ১ টাকা বাংলাদেশের কত টাকা.
দক্ষিণ কোরিয়া কোন কাজের চাহিদা বেশি
বাংলাদেশ থেকে যে কোন দেশেই কাজের উদ্দেশ্যে যাওয়ার পূর্বে প্রত্যেকটি প্রবাসগামী লোকের উচিত কিছু না কিছু উপর প্রশিক্ষণ নিয়ে যাওয়া। অর্থাৎ আপনি যেই দেশেই অর্থ উপার্জনের জন্য যান না কেন আগে জেনে নেবেন সেখানে কোন কাজের চাহিদা বেশি।
এবং যেই কাজের চাহিদা বেশি থাকবে সেই কাজটির উপর যদি যথাযথ প্রশিক্ষণ নিয়ে যাওয়া যায় তবে প্রবাসে গিয়ে বিপুল পরিমাণ অর্থ উপার্জন করা সম্ভব।
এখন অনেকেই জানতে চাইবে দক্ষিণ কোরিয়া কোন কাজের চাহিদা বেশি? আসলে আপনি যদি দক্ষিণ কোরিয়াতে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে যান তাহলে অনেক কাজই করতে পারবেন। তবে এর মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়াতে যে কাজের চাহিদা সবচেয়ে বেশি সেগুলো হলো:
বিভিন্ন ফ্যাক্টরির কাজ, ক্লিনিং এর কাজ, মেকানিক্যাল কাজ, বাসা বাড়ি বা হোটেলে কেয়ারিং এর কাজ, বাগান বাড়িতে কাজ, নার্সের কাজ, প্যাকেজিংয়ের কাজ, কনস্ট্রাকশন সাইডের কাজ এবং বিভিন্ন রেস্টুরেন্টে শেফ এর কাজ ও তার পাশাপাশি ওয়েটারের কাজ।(alert-success)
আপনি যদি স্টুডেন্ট ভিসা নিয়েও দক্ষিণ কোরিয়াতে পড়াশোনা করতে যান তাহলে পড়াশোনার পাশাপাশি আপনি পার্ট টাইম এই কাজগুলো করতে পারবেন। কেননা এই কাজগুলোর চাহিদা দক্ষিণ কোরিয়াতে আছে।
দক্ষিণ কোরিয়া কোন কাজের চাহিদা বেশি আশা করি এই প্রশ্নটির উত্তর পেয়ে গেছেন।
লটারি ছাড়া কোরিয়া যাওয়ার উপায়
আমাদের দেশ থেকে প্রতিবছরই লটারির মাধ্যমে অনেকেই দক্ষিণ কোরিয়ায় গিয়ে থাকেন। কিন্তু যারা লটারির মাধ্যমে যাওয়ার সুযোগ পান না তারা জানতে চান যে লটারি ছাড়া কোরিয়া যাওয়ার উপায় কি?
আসলে আপনি লটারি ছাড়া দক্ষিণ কোরিয়া যান কিংবা সরকারিভাবেই দক্ষিণ কোরিয়া যান যেভাবেই সেখানে যেতে চান না কেন দক্ষিণ কোরিয়াতে যাওয়ার আগে সর্বপ্রথম আপনাকে দক্ষিণ কোরিয়ার ভাষা শিখতে হবে। তাছাড়া লটারি ছাড়া দক্ষিণ কোরিয়া যাওয়ার জন্য আপনাকে যা যা করতে হবে:-
- সবার আগে আপনাকে কোরিয়ার ভাষা লিখতে পারতে হবে এবং বুঝতে জানতে হবে।
- আপনাকে অবশ্যই এইচএসসি পাশ হতে হতে হবে।
- এরপর অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন ফরম পূরণ করে আবেদনের ফি জমা দিতে হবে।
- আপনি দক্ষিণ কোরিয়া যাওয়ার জন্য উপযুক্ত আছেন কিনা তার জন্য আপনার বিভিন্ন ধরনের স্কিল টেস্ট নেওয়া হবে। আর সেই স্কিল টেস্ট বা পরীক্ষাগুলোতে আপনাকে অবশ্যই পাশ করতে হবে।
- ভিসার ফরম আপনাকে জমা দিতে হবে। এবং আপনি দক্ষিণ কোরিয়াতে যাওয়ার জন্য অনুমোদন পেয়েছেন কিনা তা সেখানকার সরকার থেকে অনুমতি প্রাপ্ত হতে হবে।
- বোয়েসেল যে ট্রেনিং এর আয়োজন করে তাতে অবশ্যই আপনাকে অংশগ্রহণ করতে হবে।
সরকারিভাবে দক্ষিণ কোরিয়া যাওয়ার উপায়
দক্ষিণ কোরিয়া কোন কাজের চাহিদা বেশি সে সম্পর্কে তো জেনে গেলেন। এবার চলুন জেনে নেই সরকারিভাবে দক্ষিণ কোরিয়া যাওয়ার উপায় কি?
আসলে আপনি যদি সরকারিভাবে দক্ষিণ কোরিয়া যেতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে লটারির মাধ্যমেই যেতে হবে। প্রতিবছরে এপ্রিল থেকে মে মধ্যে বোয়েসেলের মাধ্যমে কোরিয়া যাওয়ার লটারির বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়। আর আপনাকে সেই বিজ্ঞপ্তি দেখে বোয়েসেলের ওয়েবসাইটে গিয়ে লটারির জন্য আবেদন করতে হবে।
এরপর লটারিতে যদি আপনার নাম আসে তারপর আপনাকে পর্যায়ক্রমে পরবর্তী ধাপগুলোতে উত্তীর্ণ হতে হবে। এজন্য আপনাকে অবশ্যই দক্ষিণ কোরিয়ার ভাষা শিখতে হবে এবং জানতে হবে। এবং আপনি ঠিক কতটুকু ভাষা জানেন সে জন্য ২০০ নাম্বারের একটি পরীক্ষা হবে।
এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হবার পর আপনাকে পরবর্তী ধাপগুলোতে বসতে হবে। অর্থাৎ এরপর আপনার স্কিল টেস্ট নেওয়া হবে। এবং আপনি যদি স্কিল টেস্টে উত্তীর্ণ হন তারপর আপনার ফিটনেস এর জন্য মেডিকেল টেস্ট করতে হবে এবং পুলিশ ক্লিয়ারেন্স জমা দিতে হবে।
এবং তারপর সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আপনাকে দুই সপ্তাহের একটি ট্রেনিং করানো হবে। আর এই ট্রেনিং বোয়েসেল আয়োজন করে থাকে। তারপর ট্রেনিং সম্পন্ন হওয়ার পর আপনি কোরিয়া যেতে পারবেন।
Check out all of our how to earn money online.
দক্ষিণ কোরিয়া যেতে কত টাকা লাগে
দক্ষিণ কোরিয়া যেতে কত টাকা লাগে এ প্রশ্নের উত্তর জানার পাশাপাশি অনেকেই আবার জানতে চাই যে দক্ষিণ কোরিয়া যেতে কত টাকা লাগে? আপনি যদি বেসরকারি ভাবে দক্ষিণ কোরিয়া যেতে চান তাহলে আপনার বিমান খরচ, পাসপোর্ট, মেডিকেল টেস্ট, ভাষা শিক্ষা, বোয়েসেলের ফি, পুলিশ ক্লিয়ারেন্স ইত্যাদি সব মিলিয়ে মোট খরচ পড়বে ৫ থেকে ১০ লাখ টাকার মত। তবে যারা লটারির মাধ্যমে সরকারিভাবে দক্ষিণ কোরিয়া যায় তাদের আরো কম লাগে।(alert-success)
দক্ষিণ কোরিয়ার সর্বনিম্ন বেতন কত
অনেকেই জানতে চায় যে দক্ষিণ কোরিয়ার সর্বনিম্ন বেতন কত? সেখানে একজন শ্রমিকের বেতন সর্বনিম্ন ঘন্টা কত টাকা ধরা হয়। মূলত দক্ষিণ কোরিয়া ঘন্টা হিসেব করে টাকা দেওয়া হয়। সেখানে আপনি সর্বনিম্ন ৮ ঘন্টা এবং সর্বোচ্চ ১০ থেকে ১২ ঘন্টা কাজ করতে পারবেন এবং এই ঘন্টা হিসেব করে আপনার বেতন নির্ধারণ করা হবে।
২০২৩-এ চালু করা নতুন নিয়ম অনুযায়ী দক্ষিণ কোরিয়ায় একজন শ্রমিকের প্রতি ঘণ্টায় ন্যূনতম মজুরি ৪৬০ ওয়ান থেকে বেড়ে ৯৬২০ ওয়ান (৭.৬০ মার্কিন ডলার) করা হয়েছে। সে হিসাব মতে একজন কর্মচারী বা শ্রমিক এক ঘন্টার কাজের জন্য পাবে ৭.৬০ মার্কিন ডলারের মতো।
যা বাংলাদেশী টাকায় প্রায় ৮০০ টাকার মত। এর মধ্যে সপ্তাহে এক অথবা দুই দিন ছুটির দিন থাকবে। সুতরাং এই হিসাব মতে দক্ষিণ কোরিয়ার সর্বনিম্ন বেতন ১ থেকে দেড় লক্ষ টাকা ধরা যেতে পারে।
উপসংহার
আশা করি আজকের আর্টিকেলটি পড়ে ধারণা পেয়ে গেছেন দক্ষিণ কোরিয়া কোন কাজের চাহিদা বেশি। আপনারা যারাই দক্ষিণ কোরিয়া যেতে চান আমি বলব যে অবশ্যই কোন একটি ভালো এজেন্সির মাধ্যমে যাওয়ার চেষ্টা করবেন।
আর কোন দালাল চক্রের খপ্পরে পড়বেন না। কারণ অনেক দালাল চক্র আছে যারা ভিসা দেওয়ার নাম করে মানুষের কাছ থেকে প্রতারণা করে অনেক টাকা হাতিয়ে নেয়। তাই চেষ্টা করবেন তাদের থেকে সাবধান থাকতে।