Friday , March 14 2025

ইসলামে চুল কাটার নিয়ম

ইসলামে চুল কাটার নিয়ম – ইসলামে চুল কাটার পদ্ধতি সম্পর্কে অনেক মুসলিম ভাইয়েরা জানতে চায়। কিভাবে সুন্নতি চুল কাটা যায় এই সম্পর্কেও আপনারা অনেকেই বিভিন্ন ধরনের তথ্য জানতে চান। তাই আজকের এই পোস্টটি আপনি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত একবার ভালোভাবে পড়ুন। 

ইসলামে চুল কাটার নিয়ম

কেননা আজকের এই পোস্টে আমি আপনাদের সাথে ইসলামে চুল কাটার নিয়ম, ইসলামে সুন্নতি তরিকায় চুল কাটার নিয়ম ইত্যাদি নিয়ে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব। তবে চলুন জেনে নেই ইসলামে চুল কাটার নিয়ম বা ইসলামে পূরুষের চুল কাটার নিয়ম সম্পর্কে জেনে নেই।

{tocify} $title={Table of Contents}

ইসলামে চুল কাটার নিয়ম কিছু কথা

নিজেকে পরিপাটি রাখার জন্য অবশ্যই আমাদের চুল কাটার প্রয়োজন আছে। তবে বর্তমানের যুবক ছেলেরা বিভিন্ন স্টাইলে মাথার চুল কাটে। যা দেখতে সমাজে শোভা পায় না। তাই যদি ইসলামি তরিকায় চুল কাটা হয় তবে নিজেকে দেখতে আরও বেশী সুদর্শন লাগবে। তাই আপনারা অনেকেই ইসলামে চুল কাটার নিয়ম – ইসলামে চুল কাটার পদ্ধতি কি এই ব্যাপারে জানতে চেয়েছন। 

তাই আজকের এই পোস্টে আমি আপনাদের সাথে ইসলামে চুল কাটার নিয়ম সম্পর্কে বিশদভাবে আলোচনা করব। আপনি যদি ইসলামে চুল কাটার নিয়ম সম্পর্কে জানতে আগ্রহী হন তবে এই পোস্টটি সম্পূর্ণ একবার মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

সুন্নতি চুল কাটার নিয়ম

আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহম্মদ (স.) ছিলেন সকল বিষয়ের আদর্শের প্রতীক। যে ব্যক্তি রাসুল (স.) জীবনী মেনে অনুসরণ করেছে সে মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে রহমত পেয়েছে। সুন্নতি চুল কাটার নিয়ম এই ব্যাপারে জানতে অনেকেই আগ্রহী আছেন। তবে চলুন জেনে নেই সুন্নতি চুল কাটার নিয়ম।

কিভাবে ইসলামী তরিকায় চুল কিভাবে রাখতে হয়? ইসলামে সে ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট নিয়ম কানুন রয়েছে। ইসলামী নিয়ম নীতি অনুসরণ করে যদি আপনি সুন্নতি তরিকায় চুল রাখেন তবে আপনি মহান আল্লাহর অশেষ রহমতের ছাওয়াবের অধিকারী হবেন। পক্ষান্তরে চুল রাখার ব্যাপারে কিছু বিধিনিষেধ রয়েছে।

যদি আপনি সুন্নতি তরীকায় আপনার মাথার চুল না কেটে হারাম পদ্ধতি অবলম্বন করে চুল রাখেন কিংবা কাটেন তবে আপনার পাপ হবে। কিভাবে আপনি সুন্নতি তরিকায় চুল কাটবেন অথবা নবীজি (স.) তার মাথার চুল কেমন রাখতেন এই ব্যাপারে জানতে চান তবে এই পোস্টের নিচের অংশটুকু পড়ুন।

আরো পড়ুনঃ সিগারেটের নেশা থেকে মুক্তির উপায়

হযরত মুহম্মদ (স.) এর চুল কেমন ছিল

প্রত্যক মুসলমান প্রিয় নবী হযরত মুহম্মদ স.) এর আদর্শের ব্যাপারে জানতে চান। তবে চলুন জেনে নেই। হযরত মুহম্মদ (স.) যেভাবে চুল রাখতেন যদি আপনি সেভাবে চুল রাখতে চান তবে আগে অবশ্যই আপনাকে জানতে হবে রাসূলুল্লাহ (সা:) কিভাবে চুল রাখতেন। নবিজী(সা:) এর চুল কেমন ছিল? সে সম্পর্কে হাদিসে যে সকল তথ্য পাওয়া যায় তা নিচে উল্লেখ ধরা হলো।

বারা ইবনে আজেব (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (স.) মধ্যমাকৃতির দেহবিশিষ্ট ছিলেন। তার দুই কাঁধের মধ্যবর্তী স্থান ছিল অনেক প্রশস্ত। তার মাথার চুল কানের লতি পর্যন্ত লম্বা ছিল। (বুখারি, মুসলিম)।

আনাস (রা:) এর কাছে একবার জিজ্ঞাসা করলে তিনি উত্তরে বলেন, “রাসুলুল্লাহ (স.) এর চুল মোবারক অত্যাধিক কোকড়ানো কিংবা একেবারে সোজাও ছিল না। তার চুল উভয় কানের লতি পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল।” (বুখারি, মুসলিম)।

তাহলে উপরের বর্ণিত হাদিস থেকে আমরা জেনে নিতে পারলাম যে, আমাদের প্রিয় রাসুলুল্লাহ (স.) এর চুল মোবারক একেবার সোজা বা কোকড়ানো ছিল না। বরং মহানবী (স.) চুল মোবারক মাঝামাঝি ছিল। আশা করি আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহম্মদ (স.) এর চুল কেমন ছিল এই ব্যাপারে আপনি কিছুটা হলেও জানতে পারলেন।

আরো পড়ুনঃ কি কারণে কিডনিতে পাথর হয়

ইসলামে চুল কাটার নিয়ম – ইসলামে চুল কাটার পদ্ধতি

প্রত্যক মুসলমান ভাইদের উচিত ইসলামি তরিকায় অর্থাৎ রাসুলুল্লাহ (স.) এর সুন্নত অনুযায়ী চুল কাটা। বিভিন্ন ইসলামিক স্কলারের মতে, আমাদের প্রিয় রাসুলুল্লাহ (স.) এর আদর্শ হচ্ছে মাথায় সবগুলো চুল রেখে দেওয়া কিংবা সবগুলো চুল ফেলে দেওয়া। 

রাসুলুল্লাহ (স.) এমন ছিল না যে, তিনি কিছু অংশের চুল কামাই করতেন; আর কিছু অংশের চুল রেখে দিতেন। আশা করি আপনি এই পোস্টের এই অংশটুকু পড়ার পর ইসলামে চুল কাটার পদ্ধতি কেমন হওয়া উচিত তা বুঝতে পারছেন। বিস্তারিত আরও পড়ুন-

বর্তমান সময়ের কিছু কিছু মুসলমান যা করে, মাথার কিছু অংশের চুল কামাই করে, আর কিছু অংশ রেখে দেয় এটি ‘কুযা’এর অন্তর্ভুক্ত, যা করতে রাসুলুল্লাহ (স.) নিষেধ করেছেন। অর্থাৎ এরকম চুল ছাটা যাবে না। এই ‘কুযা’ কয়েক প্রকার হতে পারে, নিচে উল্লেখ করা হলো:-

  • মাথার কিছু কিছু জায়গার চুল ছাটা এবং অপর কিছু কিছু অংশে চুল রেখে দেওয়া।
  • মাথার সাইডের চুলগুলো ছাটাই করে মাঝখানের চুলগুলো রেখে দেওয়া।
  • মাথার মাঝখানের চুলগুলো ছাটাই করে সাইডের চুলগুলো রেখে দেওয়া।
  • মাথার সামনের চুলগুলো ছাটাই করে পিছনের চুলগুলো রেখে দেওয়া।
  • মাথার পিছনের চুলগুলো ছাটাই করে সামনের চুলগুলো রেখে দেওয়া।
  • মাথার এক পার্শ্বের কিছু চুল ছাটাই করে বাকীগুলো রেখে দেওয়া।

উপরোক্ত চুলের কাটিংগুলা হাদিস অনুযায়ী হারাম পাওয়া যায়। ইসলামে চুল কাটার বিধান আদর্শ হলো মাথায় সবগুলো চুল রেখে দেওয়া কিংবা সবগুলো চুল ফেলে দেওয়া। অর্থাৎ আপনি আপনার মাথায় সবগুলো চুল রেখে দিতে পারেন অথবা এক সাথে আপনার সব চুল ছাটাই করতে পারেন। আর ইসলামে ছেলেদের চুলের ঝুটির ব্যাপারেও রাসুলুল্লাহ (স.) নিষেধ করেছেন। মূলত এটা ইহুদীদের চুলে স্টাইল তাই আমাদের এই ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।

যেভাবে আমাদের চুল কাটা উচিত

বর্তমানে সময়ে দেশের ছেলেরা যে হেয়ার স্টাইলগুলো দিচ্ছে তার মধ্য অন্যতম স্টাইলগুলো হলো, আন্ডার কাট বা শর্ট কাট, ক্লাসিক কাট, ফেড কাট, ক্রু কাট, বাজ কাট, লেয়ার স্পাইক, ইমো সুইপ ইত্যাদি। যেগুলোর সাথে ইসলাম কোনভাবেই সমর্থিত করে না। এর কারণ হচ্ছে প্রতিটি হেয়ার স্টাইলেই মাথার কিছু অংশে বড় চুল ও কিছু অংশে ছোট চুল রাখা হয়।

কোনো কোনো ক্ষেত্রে কিছু অংশ ছেঁটে ফেলা হয়। রাসুল (সাঃ) এভাবে চুল কাটতে নিষেধ করেছেন। তবে আমাদের কিভাবে চুল করা উচিত এটা সম্পর্কে ও জানা যায়। পুরুষের চুল রাখা ও কাটার ব্যাপারে ইসলামী শরিয়ত তিনটি পদ্ধতি নির্ধারণ করে দিয়েছেঃ

(১) বাবরি চুল রাখা 

(২) ঘাড় ও কানের লতির মাঝামাঝি পর্যন্ত চুল রাখা 

(৩) মাথার সব চুল সমান করে কাটা। 

তবে আপনি যদি বাংলাদেশের রীতি অনুযায়ী চুল কাটতে চান তবে মাথার সব চুল ছোট করে কাটতে পারেন। এই হেয়ার কাটিং কে আমরা অনেকি আর্মি হেয়ার কাটিং নাম বেশী চিনে থাকি।

বহুল জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন ও উত্তর

ইসলামে চুল কাটার নিয়ম এই বিষয়ে আপনার মনে বেশ কিছু প্রশ্ন উঁকি দিচ্ছে তবে চলুন জেনে নেই সেই সকল প্রশ্ন ও উত্তরগুলো।

ইসলামে চুল কাটার নিয়ম কি?

ইসলামী আদর্শ হচ্ছে মাথায় সবগুলো চুল রেখে দেওয়া কিংবা সবগুলো চুল ফেলে দেওয়া। তবে হাদিসে মাথার সব চুল সমান করে কাটার কথা বলা হয়েছে।

ইসলামে চুল কাটার দিন কোনটি?

ইসলামে চুল কাটার সুনির্দিষ্ট দিন নির্ধারণ করা নেই। সপ্তাহের যেকোন দিন চুল ছাটা বা কাটা যাবে। ইসলামে সব সময় পাক-পবিত্র থাকার কথা বলা হয়েছে।

শেষ কথাঃ ইসলামে চুল কাটার নিয়ম নিয়ে

প্রত্যক মুসলিম ভাইদের অবশ্যই ইসলামি তরিকায় চুল কাটতে হবে। পরিশেষে আমি আপনাদের সাথে কিছু কথা বলতে চাই, আজকে আমি আপনাদের সাথে ইসলামে চুল কাটার নিয়ম – ইসলামে চুল কাটার পদ্ধতি নিয়ে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করেছি। 

যদি আপনার কাছে আজকের এই পোস্টটি তথ্যবহুল মনে হয় তবে আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করে তাদের ইসলামে চুল কাটার নিয়ম জানাতে পারেন। ধন্যবাদ। আপনাদের সবাইকে সবাই ভালো ও সুস্থ্য থাকবেন। আল্লাহ হাফেজ!

About sohansumona000@gmail.com

Check Also

ডায়ালাইসিস কত দিন পর পর করতে হয়

দিন দিন পর্যায়ক্রমে দেশে কিডনির সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন হাজারো মানুষ। বিশেষ করে আমাদের শরীরে জ্বর …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *